২০১২/০৭/২৭

একটি গোপন গালি এবং বেড়ালানুভূতি - আখতারুজ্জামান আজাদ

বেদীতে বসে কবি অনবরত উপদেশ দিয়েছিলেন,
কেউ মানেনি।
...
রঙ্গমঞ্চে দাঁড়িয়ে কবি অনবদ্য অভিনয় করেছিলেন,
কেউ দেখেনি।

কাষ্ঠমঞ্চে দাঁড়িয়ে কবি সাধুভাষায় ভাষণ দিয়েছিলেন,
কেউ শোনেনি।

পর্বতগুহায় শুয়ে কবি অবিরাম শাস্ত্রবাক্য পড়েছিলেন;
কেউ শোনেনি, কেউ শোনেনি!

রাতে ঘুমুতে গিয়ে লেপের নিচে শুয়ে
সমগ্র পৃথিবীর অগোচরে
কবি তার গৃহপালিত দুধচোর বেড়ালটাকে ছোট্ট একটি গালি দিলেন।

অমনি সমগ্র বেদ-বেদী, দেব-দেবী,
রঙ্গমঞ্চ-সঙ্গমঞ্চ, পর্বত-শরবত,
ছুঁচো-কুঁচো, মানুষ-অমানুষ,
মালভূমি-খালভূমি থরথর করে কেঁপে উঠল,
সমগ্র পশুসমাজ-পাখিসমাজ ঘা খেয়ে চিত্‍কার করে উঠল,
এমনকি বেড়ালনির্যাতিত ইঁদুরেরাও তেড়ে এল রৈরৈ করে--

"হারামজাদা কবি সেরেফ সস্তা জনপ্রিয়তার লোভে আমাদের বেড়ালানুভূতিতে দিয়েছে!"

কবির সমগ্র উপদেশ, সমগ্র ভাষণ, সমগ্র শাস্ত্র তলিয়ে গেল চোরা বেড়ালের সংকীর্ণ গূহ্যদ্বারে;

একটি গোপন গালি প্রকাশ্যে দাঁড়িয়ে রইল নির্লজ্জ শিবলিঙ্গের মতো!